নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার পরই কোপ পড়ল রাজ্যের এক সরকারি প্রকল্পে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকারের ‘চোখের আলো’ প্রকল্পটি বন্ধ করে দেওয়া হল। নতুন করে এই প্রকল্পের সুবিধা আর পাবেন না কেউ। কমিশনের নির্দেশেই আপাতত বন্ধ বিনামূল্যে রাজ্যবাসীর চক্ষু চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রকল্প ‘চোখের আলো’।
জানা গিয়েছে,গত ৪ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন থেকে ‘চোখের আলো’প্রকল্প ঘোষণা করেন। উদ্দেশ্য একটাই, রাজ্যের সব নাগরিক যাতে চক্ষু চিকিৎসার সুযোগ পান। পরদিন অর্থাৎ ৫ জানুয়ারি থেকে রাজ্যজুড়ে শিবির শুরু হয়। আগামী তিন মাস ধারাবাহিক শিবির চলার কথা ছিল। চিকিৎসক,নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা রাজ্যের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এবং পুর এলাকায় চক্ষু পরীক্ষার শিবিরে হাজির হচ্ছেন। ছানি কাটা, চশমা দেওয়ার পাশাপাশি চোখের বিভিন্ন সমস্যার দ্রুত সুরাহা হচ্ছে সেখানে। এখন এরই মধ্যে রাজ্যে বিধানসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। লাগু হয়ে গিয়েছে নির্বাচনী আচরণবিধিও। ফলে নতুন করে কোনও সরকারি প্রকল্পের কাজ করা যাবে না। তাই আটকে পড়েছে ‘চোখের আলো’।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত ‘চোখের আলো’ প্রকল্পটি চালু হওয়ার পরই ব্যাপক সাফল্যের মুখে দেখেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। মাত্র সতেরো দিনে আড়াই লক্ষেরও বেশি মানুষের ঘরে গিয়ে চক্ষুরোগের চিকিৎসা করা হয়েছে। বাড়ির দোরগোড়ায় অত্যাধুনিক সাজসরঞ্জাম নিয়ে হাজির হয়েছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। উল্লেখ্য, প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের বড় অংশই রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকার। ৫২৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ৮৫টি পুর-এলাকায় আড়াই লক্ষাধিক মানুষের চোখে নতুন আশার আলো জাগিয়েছে এই প্রকল্প। কিন্তু এবার ভোটের বাদ্যি বেজে যাওয়ায় জনকল্যাণমূলক এই কাজ কমিশনের কোপে পড়ল। ফলে নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তে প্রত্যন্ত এলাকার মানুষজন বেশ খানিকটা সময়ের জন্য হলেও এই সুবিধা থেকে পিছিয়ে পড়লেন তা বলাই বাহুল্য।