বাম-রাম জমানার অবসান ঘটিয়ে মাদারিহাট বিধানসভায় প্রথম জয় তৃণমূলের

৫৫ বছর পর মাদারিহাটে পরিবর্তন! বাংলার যে ছয় কেন্দ্রে উপনির্বাচন হল, উল্লেখ্য তার মধ্যে পাঁচটিই ছিল তৃণমূলের দখলে। শুধু মাদারিহাট ছিল বিজেপির। আজ পর্যন্ত এই কেন্দ্রে তৃণমূল কোনওদিনই জয় পায়নি। এবার উপনির্বাচনে সেই অধরা মাধুরি লাভ করতে সমর্থ হল তৃণমূল কংগ্রেস। মাদারিহাটের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী ৩০ হাজারেরও বেশি ভোটে হারিয়ে দিয়েছেন বিজেপির রাহুল লোহারকে। উত্তরের জেলায় তৃণমূলের এই সাফল্য বাংলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আরজি কর-কাণ্ডসহ যাবতীয় প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যের ছ’টি কেন্দ্রেই এবার নজরকাড়া ফল করেছে। তার মধ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য অবশ্যই মাদারিহাট। কেননা বিজেপির দখলে থাকা মাদারিহাট ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল। তার থেকেও বড় কথা তৃণমূল কংগ্রেস মাদারিহাট কেন্দ্রে এই প্রথম জয়লাভ করল। ২০১১ সাল থকেএ ১৩ বছর বাংলার ক্ষমতায় থাকলেও কখনই মাদারিহাট দখল করতে পারেনি তৃণমূল। বাম জমানায় আলিপুরদুয়ারের এই কেন্দ্রটি ছিল আরএসপির শক্তঘাঁটি। ১৯৬৯ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত কোনও বিরোধী শক্তিকে এখানে দাঁত ফোটাতে দেয়নি তৎকালীন বাম সরকার। এমনকী সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের আমলেও মাদারিহাট ছিল বাম শরিক আরএসপির দখলে। তার আগে ১৯৬৭ সালে মাদারিহাটে জিতেছিল কংগ্রেস। সেই একবারই কংগ্রেসীদের হাতে গিয়েছিল মাদারিহাট। ২০১১ সালে রাজ্যে পরিবর্তনের ভোটেও এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হন আরএসপির কুমারী কুজুর। আর ২০১৬ এবং ২০২১-এ মাদারিহাট থেকে বিজয়ী হন বিজেপির মনোজ টিগ্গা। মনোজ টিগ্গা এবার আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্র থেকে বিজয়ী হয়ে সংসদে গিয়েছেন। ফলে বিধানসভার আসনটি শূন্য হয়। তাই উপনির্বাচন। আর এই উপনির্বাচনে জয়ী হয়ে মাদারিহাট জয়ের খরা কাটাল তৃণমূল। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী জয়প্রকাশ টপ্পো এখানে ৩০ হাজারেরও বেশি ভোটে বিজেপি প্রার্থীকে পরাজিত করেন। ১৯৬৭ সালের পর ফের কোনও দক্ষিণপন্থী গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ দলের হাতে উঠল মাদারিহাটের ক্ষমতা। একইসঙ্গে ৬-এ ৬ করে বিজেপি ও সিপিএমকে কার্যত মুছে দেয় তৃণমূল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here