করোনার জালি রিপোর্ট তৈরি করার ঘটনায় তোলপাড় শহর শিলিগুড়ি। বাড়ি বাড়ি সোয়াব কালেকশন করে নামকরা বেসরকারি ল্যাব থেকে করোনা টেস্টের রিপোর্ট করিয়ে এনে দিত শিলিগুড়ির বাসিন্দা বিশাল দত্ত।
মাস কয়েক ধরে চলছিল এভাবেই। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। শেষ পর্যন্ত পুলিসের জালে বিশাল। জানা যাচ্ছে ওই সব রিপোর্টই ভুয়ো। কোনও ল্যাব নয়, রিপোর্ট তৈরি হতো ক্যাফেতে বসে।
করোনা পরিস্থিতিতে এরকমই এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটলো শহর শিলিগুড়িতে। কীভাবে এই ভুয়ো রিপোর্টের কারবারের পর্দাফাঁস হল..?
সম্প্রতি শিলিগুড়ি পাঞ্জাবিপাড়ার বাসিন্দা অমর জৈন নামে এক ব্যক্তির করোনা টেস্টের জন্য সোয়াব নিয়ে যায় অভিযুক্ত বিশাল। টেস্টের পজিটিভ রিপোর্ট দেওয়ায় সেই রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করেই অমরবাবুকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। রোগীর অবস্থার ওপর ভিত্তি করে রিপোর্ট নিয়ে সন্দেহ জাগে পরিবারের।
ওই রিপোর্ট নিয়ে অমর জৈনের পরিবার যোগাযোগ করেন সেই ল্যাবের সাথে। সেখান থেকে বলা হয়, অমর জৈন নামে কারও কোভিড টেস্ট সেখান থেকে করাই হয়নি। অবশেষে চতুরতার সাথে এক রোগীর সোয়াব সংগ্রহের নাম করে ফের বিশালকে বাড়িতে ডাকে অমর জৈনের পরিবার। সেখানে বিশালকে জেরা করতেই পুরো ঘটনাটি পরিস্কার হয়ে যায়।
জেরায় মাটিগাড়ার বাসিন্দা বিশাল দত্তের থেকে জানা গিয়েছে, একসময়ে সে ওই ল্যাবেই কাজ করত। বেশ কিছুদিন আগেই সেখান থেকে বরখাস্ত করা হয় তাকে। কিন্তু তারপরও সেই ল্যাবের নাম করে মানুষের বাড়িতে গিয়ে করোনার সোয়াব কালেক্ট করতো। সোয়াব নিয়ে সে কোনও নামীদামী ল্যাবে যেত না। সোয়াব নিয়ে সে ক্যাফেতে বসেই নকল টেস্ট রিপোর্ট তৈরি করে টাকা আদায় করত। তার ব্যাগ থেকে কিছু নুমনাও পাওয়া গিয়েছে। এর পাশাপাশি আরোও অভিযোগ শুধু করোনা নয় আরও নানান রকম রোগের জাল রিপোর্ট তৈরি করে মোটা টাকা আদায় করত অভিযুক্ত ব্যক্তি।
অভিযুক্ত বিশাল দত্তকে আটক করেছে শিলিগুড়ি থানার পানিট্যাঙ্কি ফাঁড়ির পুলিস। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে বিশালের সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত রয়েছে। এভাবে কতজনের করোনা রিপোর্ট সে করেছে তা নিয়েই তদন্ত শুরু হয়েছে সাদা পোশাকের পুলিশ এর পক্ষ থেকে। তবে করোনাকালে গতরাতের ঘটনায় যে ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি হলো তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।