করোনা প্রতিরোধে উত্তর খুঁজতে একশো বছর আগের মহামারী স্প্যানিশ ফ্লু-এর তথ্য ঘাঁটছেন গবেষকরা। কিন্তু করোনা আর স্প্যানিশ ফ্লুয়ের মধ্যে মিলের চেয়ে অমিলই বেশি। করোনার মৃত্যু তালিকায় প্রবীণদের সংখ্যা যেখানে বেশি, সেখানে স্প্যানিশ ফ্লুয়ের মূল টার্গেট ছিল তরুণরাই। ১০০ বছর আগের মহামারী, বিশ্বকে তছনছ করেছিল স্প্যানিশ ফ্লু।
মূলত, ইউহান থেকে শুরু। তারপর চিনের প্রাচীর টপকে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা। কেড়ে নিয়েছে কয়েক লক্ষ প্রাণ। মাটিতে বসিয়ে দিয়েছে বিশ্ব অর্থনীতির চাকা। এই পরিস্থিতি থেকে কবে মুক্তি মিলবে জানা নেই। জানা নেই ভাইরাস ঠেকানোর উপায়। করোনা ঠেকানোর উত্তর খুঁজতে একশো বছর আগের এক মহামারীর তথ্য় নিয়ে ঘাটাঘাটি করছেন গবেষকরা। সেই মহামারীর নাম স্প্যানিশ ফ্লু। এই পরিস্থিতি থেকে কবে মুক্তি মিলবে জানা নেই।১৯১৮ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষপ্রান্তে এসে মাথাচাড়া দেয় এই মারণ ভাইরাসটি। প্রাণ হারান পাঁচ কোটিরও বেশি মানুষ। এমনিতে এই রোগের জন্ম উত্তর আমেরিকায়। কিন্তু বিশ্বযুদ্ধের আবহে ভাইরাস সংক্রান্ত খবরে বিধিনিষেধ জারি করে বিভিন্ন দেশ। ব্যতিক্রম ছিল স্পেন। সেসময় স্পেনের সংবাদমাধ্যমে এই রোগের খবর ফলাও করে প্রচারিত হয়। তার থেকেই এই ভাইরাসের নাম স্প্যানিশ ফ্লু।
গবেষকদের একাংশের দাবি,করোনা ও স্প্যানিশ ফ্লুয়ের মধ্যে মিলের চেয়ে অমিলই বেশি,২ ভাইরাসই মানুষের শ্বাসযন্ত্রে আক্রমণ করে৷ করোনা ও স্প্যানিশ ফ্লুয়ের মধ্যে এর থেকে বেশি মিল নেই৷ করোনায় মৃতদের মধ্যে ১৮ শতাংশই ৮০ বছরের ঊর্ধ্বে৷ করোনায় ৫০ বছরের নীচে মৃতের সংখ্যা ১ শতাংশেরও কম৷ স্প্যানিশ ফ্লুতে মৃতদের মধ্যে বেশিরভাগেরই বয়স ২৫-৪০ এর মধ্যে৷ মৃতের তালিকায় ৬৫ ঊর্ধ্বরা তুলনামূলকভাবে কম৷
স্প্যানিশ ফ্লুতে তরুণদের মৃত্যুহার কেন এত বেশি? এর সঠিক উত্তর নেই গবেষকদের কাছে। তবে চিকিৎসকদের একাংশের ধারণা,১৮৮৫ সালের আগে স্প্যানিশ ফ্লু-এর মতো কোনও ভাইরাস হানা দিয়েছিল। সেই ভাইরাসের তীব্রতা কম থাকায় মহামারীর চেহারা নেয়নি। তবে সেইসময়ে অনেকেই সেই ভাইরাসে আক্রান্ত হন। ফলে অনেক মানুষের শরীরে ভাইরাসের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে যায়। এই অ্যান্টিবডির কারণেই প্রবীণদের মধ্যে বেশি প্রভাব ফেলতে পারেনি স্প্যানিশ ফ্লু। তাই স্প্যানিশ ফ্লুয়ে মৃতের তালিকায় তরুণদের সংখ্যা এত বেশি ছিল৷