সরকারি রাস্তা দখল করে তৈরি হয়েছে বাড়ি, তারই প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রতিবেশীদের হাতেই আক্রান্ত হতে হলো সেনা জওয়ানের পরিবারকে। অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় শিলিগুড়ি পুরোনিগমের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য শান্তিনগর এলাকা। “মাথায় আশীর্বাদের হাত রয়েছে কাউন্সিলরের, তাইতো এখনও কোন সুরাহা হয়নি” এমনই সুর তুলে ভয়ংকর অভিযোগ আনলেন মধ্য-শান্তিনগর নিবাসী মধুমিতা রায়।
জানা গিয়েছে, দেশের সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বে মোতায়েন রয়েছেন শান্তিনগরের এস এস বি জওয়ান। বর্তমানে তার পরিবারের লোকেরাই নিরাপত্তাহীনতায় ঘরছাড়া। সশস্ত্র-সীমা-বলে চাকরির সূত্রে স্বামী দীর্ঘদিন বাইরে কর্মরত, যে কারণে একমাত্র মেয়েকে নিয়ে দিনযাপন মধুমিতা রায়ের। অভিযোগ, তিনি বাড়ি তৈরির সময় বাড়ির দুপাশেই সরকারি রাস্তা থাকলেও পরবর্তীতে একপাশের রাস্তা প্রতিবেশীর মাধ্যমে দখল হয়ে যায়। ফলত: বাড়ির কাছেই থাকা পাইপ লাইনের যেকোন মেরামতির কাজ হলে সেখানে চলাফেরা করা কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। সমস্যায় পড়তে হয় গলি নিবাসী প্রত্যেককেই। কিন্তু অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়ায় কেউই ভয়ে মুখ খোলেনি। তবে ব্যতিক্রমী মধুমিতা দেবী প্রথম থেকেই সোচ্চার হন। অভিযোগ পুরোনিগমে জানান লিখিতভাবে, কাজ না হওয়ায় অবশেষে টক-টু-মেয়রে গৌতম দেবকে জানান কয়েকবার। আশ্বাস এবং একবার চোখ দেখানো ভিজিট ছাড়া ফলপ্রসু হয়নি কোন কিছুই।
মুখ্যমন্ত্রী যখন রাজ্যজুড়ে জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কড়া নির্দেশ দিয়েছেন, ঠিক সেই সময় এই ঘটনা অনেক প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। প্রসঙ্গত, জমি কাণ্ডে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হতে হয়েছে সেই বিধানসভারই তাবর তাবর নেতাদের। এমতাবস্থায় মধুমিতার অভিযোগ অনেকের কাছেই পীড়াদায়ক হতে পারে। আঁচ বুঝতে পেরে অভিযোগের বদলায় জুটে মার, খেতে হল কিল-ঘুসি। হাসপাতালে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে আসার পর, একলা মেয়েকে নিয়ে আত্ম:সংকটে ভুগতে থাকায় থানার দ্বারস্ত হন জওয়ানের স্ত্রী, অভিযোগ দায়ের করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্তের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন “উনিতো এলাকায় থাকেন কিনা। গতকাল পুলিশ এসেছিল তখনো উনি ছিলেন না। উনার যদি কোন অভিযোগ থাকে সামনাসামনি এসে বলুক!”
বিষয়টি সম্পর্কে স্থানীয় বিধায়িকা শিখা চ্যাটার্জির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন “আমি ওই রাস্তা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল, ওখানে রাস্তা ছিল আমিও জানতাম! যেটা হয়েছে সেটা অনুচিত!”
রাস্তা দখলের অভিযোগের বিষয়টি এর আগে একাধিকবার টক টু মেয়রের অনুষ্ঠানে অভিযোগ জানিয়েও কোন সুরাহা না হওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে মেয়র গৌতম দেবের কাছে জানতে চাইলেন তিনি বলেন “বর্তমানে আমি কলকাতায় রয়েছি! টক টু মেয়রে বহু অভিযোগ জমা পড়ে, যেটা এখান থেকে বলা সম্ভব নয়। আমি শিলিগুড়ি ফিরে বিষয়টি দেখছি।”