ইস্তফার ঘোষণা থেকে ‘ইউ-টার্ন’, সংখ্যালঘু রাজনীতিতে তাপ বাড়াল ভরতপুরের সাসপেন্ডেড বিধায়ক!

নিজস্ব প্রতিবেদনঃ বিধায়ক পদ থেকে ১৭ ডিসেম্বর ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু তার আগেই নাটকীয় পরিবর্তন। “আপাতত ইস্তফা নয়” – রবিবার একেবারে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন সাসপেন্ডেড তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। ভোটারদের অনুরোধেই সিদ্ধান্ত বদল, দাবি ভরতপুরের বিধায়কের। “ভরতপুরের মানুষ বলেছে, আপনি থাকুন। আবার ভোটে দাঁড়াবেন, আবার আপনাকে জেতাবো” – মন্তব্য কবীরের।

তবে শুধু পদ ধরে রাখা নয়, ২২ ডিসেম্বর নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা করলেন তিনি। AIMIM প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসির সঙ্গে জোটের ইঙ্গিতও স্পষ্ট। বলেন,
“ওয়াইসি সাহেবের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি আমাকে হায়দরাবাদে ডাকছেন। আমার কর্মী সম্মেলনে তাঁকেই আমন্ত্রণ জানাবো।”

বাবরি মসজিদের শিলান্যাস ঘিরে দল থেকে সাসপেনশনের অভিযোগ তোলেন হুমায়ুন। সরাসরি আক্রমণ,
“তৃণমূল আমাকে শুধু বাবরি মসজিদ করার জন্যই সাসপেন্ড করেছে। ফুরফুরা শরিফ করলে চলবে, বাবরি মসজিদ করলে চলবে না?”

গীতাপাঠ বনাম কোরান পাঠ – পাল্টা সংস্কৃতিকরণ রাজনীতির বার্তা

বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যে যখন ‘পাঁচ লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠ’-এর প্রস্তুতি, তার জবাবে “এক লক্ষ কণ্ঠে কোরান পাঠ”-এর ঘোষণা ছাড়লেন হুমায়ুন কবীর। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠান হবে বলে জানালেন তিনি।

বিজেপিকে নিশানা করে মন্তব্য,
“বাংলা দখল করতে বিজেপি গীতা পাঠের আয়োজন করছে। তার জবাব দেব— কোরান পাঠের পর মাংস-ভাত খাইয়ে বাবরি মসজিদের কাজ শুরু করব।”

তৃণমূলের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু প্রতিনিধিত্ব কমানোর অভিযোগ

গতকাল বেলডাঙ্গা–রেজিনগরের মাঝে বাবরি মসজিদের আদলে নতুন মসজিদের শিলান্যাস করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একরাশ তোপ দাগেন তিনি। দাবি,
“বাংলায় সংখ্যালঘুদের ভোটে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মমতা। তবুও সংখ্যালঘু বিধায়কদের সংখ্যা কমিয়েছেন ধাপে ধাপে।”

সংখ্যা তুলে ধরেন

২০১১ সালে সংখ্যালঘু বিধায়ক ৬৭ জন
২০১৬ সালে ৫৭
২০২১ সালে নেমেছে ৪৪-এ


প্রতিশ্রুতি তীক্ষ্ণ
“আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রাক্তন করবই।”

তৃণমূল নেতৃত্বকেও সরাসরি আক্রমণ

ফিরহাদ হাকিমকে নাম না করে রীতিমতো হুঁশিয়ারি হুমায়ুন কবীরের,
“আমার সঙ্গে যা হয়েছে, পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতেই হবে। গোষ্ঠী সংঘর্ষে তৃণমূল শেষ হয়ে যাবে।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষণ

বিধানসভা ভোটের বছরে সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক যার দখলই পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে সবচেয়ে বড় সমীকরণ। সেই জায়গাতেই হুমায়ুন কবীরের নতুন দল এবং AIMIM যোগসূত্র বিরাট আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ইস্তফা স্থগিত, নতুন দল গঠন, ধর্মীয় অনুষ্ঠান পাল্টা অনুষ্ঠান – সব মিলিয়ে সংখ্যালঘু রাজনীতিতে তাপ তুললেন সাসপেন্ডেড বিধায়ক।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here