শিলিগুড়িঃ গ্রাম থেকে শহর, যোগাযোগ ব্যবস্থার সর্বাঙ্গীন উন্নয়নে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার নদীয়ার কৃষ্ণনগরে খোলা মঞ্চ থেকে একসঙ্গে উদ্বোধন করলেন ২০ হাজার পথশ্রী এবং বহুকিলোমিটার রাস্তাশ্রী প্রকল্পের কাজ। এই বিশাল উদ্যোগে নকশালবাড়ি, ফাঁসিদেওয়া সহ উত্তরবঙ্গের একাধিক এলাকার রাস্তা উন্নয়নও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী ভার্চুয়ালি যুক্ত হন শিলিগুড়ি মহকুমার নকশালবাড়ি বাজারে আয়োজিত অনুষ্ঠানের সঙ্গে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন শিলিগুড়ি পুরনিগমের মেয়র গৌতম দেব, শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি অরুণ ঘোষ, দার্জিলিং জেলার জেলাশাসক সহ অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকরা। মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে নকশালবাড়ি সহ গোটা রাজ্যে পথশ্রী প্রকল্পের কাজের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়।
মেয়র গৌতম দেব জানান,
“গ্রাম এবং শহর দুই ক্ষেত্রেই যোগাযোগ ব্যবস্থার মানোন্নয়নে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পথশ্রী ও রাস্তাশ্রী প্রকল্পের কাজ শুরু হল। গ্রামীণ মহকুমা পরিষদ এলাকায় ৫০ কিলোমিটার রাস্তার কাজ হবে, যার মধ্যে নকশাবাড়িতে তৈরি হচ্ছে দু’টি নতুন রাস্তা। ফাঁসিদেওয়া ব্লকে ১৩টি রাস্তা এবং বিভিন্ন এলাকায় আরও বহু রাস্তার কাজও শুরু হচ্ছে। শহরেও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ পথের উন্নয়ন দ্রুতগতিতে এগোবে। ২০১১ সালের পর থেকে গ্রামীণ সড়ক উন্নয়নে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে অভূতপূর্ব অগ্রগতি হয়েছে। আজ তারই চতুর্থ পর্বের সূচনা হল।”
জেলাশাসকও জানান,
“সারা রাজ্যে ২০ হাজার কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ ও উন্নয়নের কাজ হবে। রাজ্যে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ, এবং মহকুমা পরিষদে প্রায় ২০ কোটি টাকার উন্নয়ন এই প্রকল্পকে সফল ও সর্বব্যাপী করবে।”
পথশ্রী প্রকল্প মূলত গ্রামীণ এলাকার রাস্তাগুলিকে উন্নত, নিরাপদ ও সুগম করা যাতে কৃষি পণ্য পরিবহন, ছাত্রছাত্রীদের চলাচল এবং স্বাস্থ্যসেবায় পৌঁছনো আরও সহজ হয়।
রাস্তাশ্রী প্রকল্প শহরাঞ্চল সহ গুরুত্বপূর্ণ জেলা ও আঞ্চলিক সংযোগ পথগুলির মানোন্নয়ন ঘটাবে, ফলে বাণিজ্য, পরিবহন ও পর্যটন ক্ষেত্রে জোরদার উন্নতির সম্ভাবনা তৈরি হবে।
রাজ্য সরকারের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী:
গ্রামীণ এলাকায় ৮০৮ কিলোমিটার নতুন রাস্তা, শহরাঞ্চলে ১৬৭ কিলোমিটার সংযোগ রাস্তার উন্নয়ন, ২০ হাজার পথশ্রী স্থাপন, রাস্তাশ্রীতে ৩০ কিলোমিটার গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ পথের কাজ!
সরকারের বার্তা “প্রতিটি গ্রাম, প্রতিটি পরিবার যাতে উন্নত, নিরাপদ ও আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার সুবিধা পায় পথশ্রী ও রাস্তাশ্রী সেই লক্ষ্য অর্জনের অন্যতম চাবিকাঠি।”
পরিকল্পনার প্রতিটি ধাপে দ্রুত বাস্তবায়ন, মান নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তা বিধি নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। আগামী দিনে এই প্রকল্প রাজ্যের অর্থনীতি, কৃষিপণ্য পরিবহন ও পর্যটনে আরও ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে এমনই আশা সরকারের।
শিলিগুড়ি মহকুমা থেকে পার্থ প্রতিম দাসের রিপোর্ট, শিলিগুড়ি প্রাইম টাইমস।









































