গ্রীষ্মে আমের স্বর্গদ্বার শিলিগুড়িতে, গীতাঞ্জলি উৎসবে উপচে পড়া ভিড়

শিলিগুড়ি: গ্রীষ্মের প্রখর তাপদাহে স্বাদ ও স্বস্তির পরশ নিয়ে শিলিগুড়িতে শুরু হয়েছিল অষ্টম গীতাঞ্জলি আম উৎসব। গত ৬ জুন থেকে শহরের প্রাণকেন্দ্রের এক শপিং মলের প্রাঙ্গণে তিনদিনব্যাপী এই উৎসব ইতিমধ্যেই শহরবাসী ও পর্যটকদের কাছে এক বিশেষ আকর্ষণ হয়ে উঠেছে।

গত আট বছর ধরে এই গ্রীষ্মকালীন আম উৎসব শিলিগুড়ির ক্যালেন্ডারে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। এবারের উৎসবের উদ্বোধন করেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন শহরের বিশিষ্টজনেরা, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও উৎসবপ্রেমীরা।

এ বছর উৎসবে বসেছে ৩০টির বেশি স্টল, যেখানে দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আনা হয়েছে হিমসাগর, ল্যাংড়া, আলফানসো, চৌসা, দসরী সহ নামী আমের নানা জাত। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তের ঘরোয়া আমও দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তবে দর্শনার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চর্চিত হয়েছে জাপানি মিয়াজাকি আম, যার দাম প্রায় ২ লক্ষ টাকা!

এছাড়া মেলায় চোখ জুড়িয়েছে ২৭ রকম আমের মিষ্টি। স্বাদ ও সৌন্দর্যের অপূর্ব মেলবন্ধন এই মিষ্টিগুলি যেমন দর্শকদের আকর্ষণ করেছে, তেমনি রসনাতৃপ্তিও করেছে।

উৎসবে অংশ নিচ্ছেন দার্জিলিং ও সিকিম ফেরত বহু পর্যটক। অনেকে বলছেন, গরমে শিলিগুড়ির আম উৎসব তাঁদের সফরের অন্যতম স্মরণীয় অভিজ্ঞতা।

উৎসবকে ঘিরে আয়োজিত হয়েছে একাধিক অনুষ্ঠানের — শিশুদের জন্য “বসে আঁকো” প্রতিযোগিতা, নানা বয়সের অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে “আম খাওয়ার প্রতিযোগিতা”, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, নৃত্য ও সংগীতের আসর। পাশাপাশি রয়েছে আম দিয়ে তৈরি পাঁপড়, আচার ও নানা বাহারি পদ, যা রসনারসিকদের মন জয় করেছে।

এই উৎসব সম্পর্কে মেলা উদ্যোক্তা রাজ বসু বলেন,
“আম শুধু একটি ফল নয় — এটি ভারতবাসীদের আবেগ। এই উৎসবের মাধ্যমে শহরবাসীকে একত্রিত করার পাশাপাশি, ভারতীয় আমের বৈচিত্র্য তুলে ধরতে চেয়েছি। আগামী বছর আরও বড় আকারে আয়োজন করার পরিকল্পনা রয়েছে।”

আজ ৮ জুন, এই তিন দিনব্যাপী উৎসবের শেষ দিন। তবে শেষদিনেও সকাল থেকে ভিড় উপচে পড়েছে আমপ্রেমীদের। শহরবাসীর কাছে এই উৎসব যেন হয়ে উঠেছে এক স্বাদে-ভরপুর গ্রীষ্মকালীন মিলনমেলা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here