শিলিগুড়ি: “খাকি উর্দি পড়লে আমরা যেমন স্ট্রেসে থাকি, তেমনই থাকে আমাদের পরিবারও। তাই শুধু টাকা পাঠালেই হবে না, পরিবারকে সময় দিন” — এই বার্তাই দিলেন শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার সি সুধাকর। মঙ্গলবার দীনবন্ধু মঞ্চে অনুষ্ঠিত হল পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত ‘পুলিশ পরিবারের কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের সংবর্ধনা সভা’র তৃতীয় বর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে পুলিশ কমিশনার জানান, কর্তব্যপালনের মাঝে পরিবারকে ভুলে গেলে মানসিক ভারসাম্য নষ্ট হয়, যার প্রভাব পড়ে সন্তানদের ওপর। তিনি আরও বলেন, “সন্তানরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যখন একজন পুলিশ কর্মী স্বামী বা স্ত্রী ঘরোয়া দায়িত্ব এড়িয়ে চলে।”
অনুষ্ঠানে উত্তরবঙ্গ পুলিশের আইজি রাজেশ যাদব বলেন, “সাধারণ মানুষের করের টাকায় আমাদের বেতন, তাই তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের প্রথম কাজ। তবে তার মানে এই নয় যে, আমরা পরিবারকে উপেক্ষা করব। পরিবারেও সময় দিতে হবে।”
‘একতায় উত্থান, বিচ্ছেদে পতন’ — এই ক্যাচলাইনে অনুপ্রাণিত হয়ে বিগত তিন বছর ধরে বিভিন্ন উদ্যোগে যুক্ত পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটি। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার পদস্থ পুলিশ কর্তারা, শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের উচ্চপদস্থ অফিসাররা সহ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওয়েস্ট বেঙ্গল পুলিশ স্টেট ওয়েলফেয়ার কমিটির কনভেনার বিজিতাশ্যো রাউত।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ওয়েলফেয়ার কমিটির কনভেনার পাওয়িত্রা সিং। অনুষ্ঠানে কৃতি পুলিশ পরিবারের ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে সম্মাননা তুলে দেন পুলিশ আধিকারিকরা।
পরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিজিতাশ্যো রাউত জানান, “জনসংখ্যা বাড়লেও পুলিশের সংখ্যা বাড়েনি। মুখ্যমন্ত্রী নিয়োগের কথা বললেও মামলা চলায় তা আটকে আছে। তবে পুলিশ তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছে।” সম্প্রতি পুলিশ জিপের তেল বরাদ্দ ও যানবাহন সংকোচনের বিষয়ে প্রশ্ন উঠলেও তিনি তা এড়িয়ে বলেন, “মানুষের চাহিদা বাড়ছে, পুলিশও সেই অনুযায়ী নিজেদের কাজ করছে।”
পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির এই উদ্যোগ পুলিশের মানসিক স্বাস্থ্য, পরিবারিক ভারসাম্য ও সন্তানের ভবিষ্যৎ — এই তিন স্তম্ভকে গুরুত্ব দিতে আরেকবার উদ্বুদ্ধ করল।