শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি উপলক্ষে সারা রাজ্যের মতো বাংলার গ্রামীণ জনপদেও পালিত হল জন্মাষ্টমী উৎসব। তবে পুজো, ভজন বা কীর্তনের পাশাপাশি গ্রামীণ সংস্কৃতিতে এই দিনটির অন্যতম আকর্ষণ রয়ে গিয়েছে কাদা খেলা। বহু গ্রামে জন্মাষ্টমী মানেই মাঠে-মাঠে কাদা মেখে আনন্দ করার দিন।
ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, কৃষ্ণ ছিলেন গোপাল। গোপাল বন্ধুদের নিয়ে গরু চরানো, মাঠে-ঘাটে খেলাধুলা আর বর্ষার কাদামাখা জমিতে উচ্ছ্বাস—এই লীলার প্রতিফলনই আজও ধরা পড়ে জন্মাষ্টমীর কাদা খেলায়। তাই ধানক্ষেত বা খোলা মাঠে যুবকেরা ঝাঁপিয়ে পড়েন কাদা খেলায়। ছোট থেকে বড়, এমনকি প্রবীণরাও উৎসাহে যোগ দেন এই আনন্দে।
খেলার ধরনও নানান রকম—কোথাও দড়ি টানাটানি, কোথাও কাদার মধ্যে ফুটবল প্রতিযোগিতা, আবার কোথাও শুধুই কাদায় গড়াগড়ি দিয়ে উল্লাস। গ্রামের মানুষজন খেলোয়াড়দের উৎসাহ জুগিয়ে পরিবেশকে করে তোলেন উৎসবমুখর।
স্থানীয়দের দাবি, কাদা খেলা শুধুই বিনোদনের খেলা নয়, বরং কৃষ্ণের শৈশব লীলাকে স্মরণ করার এক ভক্তিমূলক রূপ। পাশাপাশি, এটি শরীরচর্চারও এক অভিনব উপায়। দলগত মনোভাব, সহমর্মিতা ও পারস্পরিক একাত্মতা শেখানোর ক্ষেত্র হিসেবেও গুরুত্ব পায় এই খেলা।
আজও জন্মাষ্টমী এলে বহু গ্রামে মিলিতভাবে আয়োজন করা হয় কাদা খেলার। ভক্তদের বিশ্বাস, এই খেলার মধ্য দিয়েই কৃষ্ণলীলার সরল আনন্দকে জীবন্ত করে তোলা হয়। তাঁদের মতে, নিষ্পাপ আনন্দে ভিজে ওঠাই জন্মাষ্টমীর আসল বার্তা—অশুভকে মুছে ফেলে শুভকে বরণ করা।