সুযোগ পেলে আমিও স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করাবো! -অন্য সুরে দিলীপ ঘোষ

রাজ্যের ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্প এতদিন তাঁর কাছে ছিল ভাঁওতা৷ পরিবারের বেশ কয়েকজন স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করানোয় লাগাতার শাসকদলের কটাক্ষের শিকার হতে হচ্ছে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। নানাবিধ প্রশ্নের সম্মুখীনও হতে হচ্ছে তাঁকে। এই পরিস্থিতিতে খানিকটা অন্যরকম সুর শোনা গেল মেদিনীপুরের সাংসদের গলায়। বললেন, তিনি স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডের বিরোধী নন!

প্রসঙ্গত,তৃণমূল সরকারের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প। রাজ্যের প্রতি পরিবারপিছু পাঁচ লক্ষ টাকা ক্যাশলেস চিকিৎসার পরিষেবা। বঙ্গের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসাথির কার্ড দেখালেই এই প্রকল্পের সুবিধা। এমনকী দিল্লির এইমস ও ভেলোরেও কার্ডের সুবিধা মিলবে। রাজ্যের ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্প নিয়ে কড়া সমালোচনা জারি রেখেছেন বিজেপি নেতারা। কেন্দ্রের ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পের পক্ষেই সওয়াল করছেন তাঁরা। তৃণমূল সরকারের স্বাস্থ্যসাথি প্রকল্পকে বিজেপি রাজ্য সভাপতিই কখনও বলেছেন ভাঁওতা। কখনও বলেছেন ভোটের আগে ভেট। কিন্তু ‘স্বাস্থ্যসাথী’র ‘সুফল’ হাতছাড়া করতে নারাজ গেরুয়া শিবিরের নেতাদের অনেকেই। স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডই নিলেন খোদ বিজেপি রাজ্য সভাপতির পরিবার। ঝাড়গ্রামে কুলিয়ানার বাড়িতে দিলীপ ঘোষের আত্মীয়রা স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড হাতে পেয়েও গিয়েছেন।পরিবারের সদস্যরা স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করানো নিয়ে প্রশ্ন করা হলে দিলীপ বলেন, ‘‘আমি স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডের বিরোধিতা করছি না। আমি সরকারের প্রতারণার বিরোধিতা করছি। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করার সুযোগ পেলে আমিও করব।’’ পাশাপাশি নিজের অবস্থানে অনড় থেকে তিনি প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, “কার্ড পেলেন অথচ সুযোগ পেলেন না, তাহলে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড মাথায় নিয়ে শুয়ে থাকলে কি জ্বর কমবে?”

উল্লেখ্য, রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের আদি বাড়ি ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুরের কুলিয়ানা গ্রামে। এখনও সাংসদের মা, ভাই-সহ পরিবারের সদস্যরা সেখানেই থাকেন। ভাই হীরক ঘোষ গোপীবল্লভপুর ২ নম্বর ব্লকের বিজেপির মণ্ডল সভাপতি। খুড়তুতো ভাই সুকেশ ঘোষ জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি। তাই স্বাভাবিকভাবেই দিলীপ ঘোষের পাশাপাশি তাঁর ভাইদের গলায়ও সর্বদাই শোনা যায় মুখ্যমন্ত্রী বিরোধী সুর। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড প্রসঙ্গেও বারবার রাজ্যকে নিশানা করতে দেখা গিয়েছে তাঁদের। এসবের মাঝেই সম্প্রতি যেখানে গোপীবল্লভপুরের কুলিয়ানা এলাকার বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ছবি তোলা হচ্ছে, সেখানে দেখা যায় হীরক ঘোষের স্ত্রী-সহ পরিবারের বেশ কয়েকজনকে। স্বাভাবিকভাবেই বঙ্গবিজেপির প্রথম সারির নেতার পরিবারের সদস্যদের এই কার্ডের লাইনে দেখে চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। যা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here