অভিনেতা সাইফ আলী খানকে তার বাড়িতে হামলার ঘটনায় তদন্ত করছে মুম্বাই পুলিশ। পুলিশ হত্যার চেষ্টা বা গুরুতর আঘাত করার অভিযোগের পাশাপাশি ‘সশস্ত্র ডাকাতি’র মামলা দায়ের করেছে। ১৫ জানুয়ারি গভীর রাতে সাইফের ওপর হামলার সময় তার বাড়িতে কাজ করা কেয়ারটেকারও আহত হন।
কেয়ারটেকারই প্রথমে চোরকে বাড়ির ভেতরে ঢুকতে দেখে চিৎকার করেছিলেন। মুম্বাইয়ের বান্দ্রা থানায় দায়ের করা এফআইআরে তিনি পুরো ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন।
ইন্ডিয়া টুডে-এর সাথে যুক্ত দিভ্যেশ সিংয়ের রিপোর্ট অনুযায়ী, হাউস হেল্প তার অভিযোগে উল্লেখ করেছেন যে, ১৫ জানুয়ারি রাত ১১টার দিকে তিনি সাইফের ছোট ছেলেকে ঘুম পাড়ানোর পর নিজেও ঘুমাতে যান। রাত ২টার দিকে তিনি কিছু আওয়াজ শুনে জেগে ওঠেন। তিনি বলেন,
“জেগে দেখলাম বাথরুমের দরজা খোলা এবং লাইট জ্বলছে। প্রথমে ভাবলাম করিনা ম্যাডাম বাচ্চার সাথে দেখা করতে এসেছেন। এরপর আমি আবার ঘুমিয়ে পড়ি। কিন্তু আবার মনে হলো কিছু সমস্যা আছে। তাই আমি উঠে বাথরুম পর্যন্ত গেলাম। যখন নিচু হয়ে দেখার চেষ্টা করলাম, তখন দেখলাম একজন ব্যক্তি বাথরুম থেকে বেরিয়ে এসে ছোট ছেলের বিছানার দিকে যাচ্ছে।”
এরপর হাউস হেল্প ছুটে শিশুটির কাছে যান। তখন চোর আঙুল দেখিয়ে তাকে চুপ থাকার হুমকি দেয়। এরপরে আরও কয়েকজন উঠে যান। তাদেরও চোর চুপ থাকতে বলে হুমকি দেয়। হাউস হেল্পের বক্তব্য অনুযায়ী,
“যখন আমি শিশুটিকে তুলে নিতে গেলাম, তখন চোর তার বাঁ হাতে কাঠের টুকরো এবং ডান হাতে একটি হেক্সা ব্লেডের মতো কিছু নিয়ে আমার দিকে এগিয়ে আসে। সে আমাকে ব্লেড দিয়ে আঘাত করার চেষ্টা করে। আমার দুই হাতের কব্জির কাছে এবং বাঁ হাতের মাঝের আঙুলে আঘাত লাগে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আপনার কী দরকার?’ সে বলল, ‘টাকা দরকার।’ আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘কত?’ তখন সে ইংরেজিতে বলল, ‘এক কোটি।’”
অনেক মানুষের আওয়াজ শুনে চোর ঘর থেকে পালিয়ে যায়। এরপর সাইফ ও করিনা সেখানে ছুটে আসেন। হাউস হেল্প আরও বলেন, “সাইফ আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘সে কে এবং কী চায়?’ এসময় চোর সাইফের ওপর কাঠ ও ব্লেড দিয়ে হামলা করে। যখন আমি ঘরে ঢুকি, তখন সে আমার ওপরও হামলা করে। আওয়াজ শুনে অন্যরা এলে সে পালিয়ে যায়। সাইফের গলার পেছনে, ডান কাঁধের কাছে, পিঠের বাঁ দিক, বাঁ হাতের কব্জি এবং কনুইয়ের কাছে আঘাত লাগে।”
সাইফ আলী খানকে আক্রমণকারী অভিযুক্তের ছবি প্রকাশিত হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজে অভিযুক্তকে সিঁড়ি দিয়ে নামতে দেখা গেছে। তবে এখনো অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সাইফের ওপর এই হামলা বান্দ্রার তার অ্যাপার্টমেন্টের ১২তম তলায় ঘটে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, হামলাকারী সাইফের বাড়িতে গোপনে প্রবেশ করেছিল। ঘটনার পরে সাইফের গৃহ সহকারী তাকে অটো রিকশায় লীলাবতী হাসপাতালে নিয়ে যান। অস্ত্রোপচারের পরে চিকিৎসকরা জানান যে তিনি বিপদমুক্ত।
বান্দ্রা পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির (BNS) ধারা ৩১১ (জান নেওয়া বা গুরুতর আঘাত করার চেষ্টাসহ ডাকাতি), ৩৩১ (৪) (রাতে বাড়িতে জোর করে প্রবেশ বা অনধিকার প্রবেশ) এবং অন্যান্য ধারায় মামলা দায়ের করেছে।












































