শিলিগুড়ি: নারী ও পুরুষ এই দুইয়ে মিলে গড়ে ওঠে একটা গোটা সংসার। মনুষ্য সমাজের এই দুইয়ের মধ্যে শারীরিক কিছু পার্থক্য থাকলেও মানসিক পার্থক্য কোনো নেই বললেই চলে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের মানসিক পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। যেমন প্রচন্ড দুঃখ হলে নারীরা চোখের জলের বন্যা বইয়ে মনের বোঝা খানিকটা হাল্কা করে নিতে সক্ষম হয়। কিন্তু পুরুষের ক্ষেত্রে চোখের জল আসাটা যেন বিরল ঘটনা। ফলে গুমরে মরে পুরুষের মন। এদিকে নারীরা চোখের জলে দুঃখের বহিপ্রকাশ ঘটাতে পারে বলে নারীরাই দুঃখী ও পুরুষদের চোখে জল দেখা যায় না বলে পুরুষরা পাষান হয়ে ধরা দেয় ধরাধামে। তাই নারীদের সুখ দুঃখ নিয়ে প্রচুর কবিতা, গল্প, পুজোর থিমের ছড়াছড়ি। তবে পুরুষেরও যে মন মানসিকতা আছে, পুরুষদেরও যে দুঃখ আছে আর তা চাপা আগুনের মতো প্রতিনিয়ত জ্বলছে তা বোঝাতে এবার শ্যামা পুজোর থিমকে হাতিয়ার করল শিলিগুড়ির পূর্ব বিবেকানন্দ পল্লীর সংহতি ক্লাব।
এ বছর তাঁদের শ্যামা পুজোর ৫৩ তম বর্ষ। শ্যামা পুজোর থিম “পুরুষের দায়বদ্ধতা ও ব্যাথা।” এই থিমের মাধ্যমে তারা পুরুষর দায়বদ্ধতাকে প্রধান রূপে দেখাতে চায়। একটি পুরুষের তার সংসারের প্রতি যে দায়বদ্ধতা সেটাই প্রস্ফুটিত হবে পুজো মণ্ডপে। এই দায়বদ্ধতা শুধু তার পিতা ও মাতার প্রতিই নয়। এই দায়বদ্ধতা তার পিতা-মাতার পাশাপাশি স্ত্রী, সন্তান, কাজের জায়গা ও সমাজ সব কিছুর প্রতি। এই দায়বদ্ধতা একটি নারীর মধ্যে যেমন আছে তেমনি দায়বদ্ধতা রয়েছে একটি পুরুষের। আর সেই দায়বদ্ধতার মাঝে পুরুষরা সব সময় সুখ, দুঃখ, হাসি, কান্না সবটাই মন খুলে প্রকাশ করতে পারে না। জানা গিয়েছে শ্যামা মাকে এখানে দেখা যাবে একজন গৃহবধূ হিসেবে আর গোটা মণ্ডপসজ্জায় থাকবে পুরুষের দায়বদ্ধতা ও ব্যাথার কাহিনী। পাশাপাশি থাকবে কিছু সুখ ও হাসির মুহুর্তও। পুজো কমিটির সম্পাদক সুজন সাহা বলেন, একটা সংসার ও সমাজের প্রতি নারী ও পুরুষ উভয়েরই সমান দায়বদ্ধতা আছে। নারীদের নিয়ে প্রচুর থিম তৈরী হয়েছে কিন্তু পুরুষদের নিয়ে এখনও কোনো থিম চোখে পড়ে নি। তাই পুরুষের ব্যাথা ও দায়বদ্ধতা নিয়ে পুজোর থিমের ভাবনা চিন্তা করা হয়েছে।
এই থিমের মাধ্যমে সমাজে একটা বার্তা দিতে চাই নারী ও পুরুষ উভয়েরই সংসার ও সমাজের প্রতি সমান দায়বদ্ধতা আছে। নারী-পুরুষ উভয়েরই ব্যাথা-বেদনাও আছে সমান মাত্রায়। পুজো কমিটি আশাবাদি এই অভিনব ভাবনার থিম দেখতে প্রচুর দর্শক সমাগম হবে।
