ঘট ভরে বোধনের মাধ্যমে মা দূর্গার পুজোর চল এখনো অব্যাহত মানিকচকের লালবাথানিতে।প্রায় আড়াইশো বছরের বেশি পুরোনো লালবাথানি গ্রামের জমিদার বাড়ীর দুর্গাপূজা।একেবারে প্রাচীন রীতিনীতি মেনেই এই দূর্গাপূজো হয়ে আসছে।আজ রবিবার কৃষ্ণ পক্ষের নবমী তিথিতে বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হল দূর্গাপুজো।সকালে স্থানীয় জমিদার বাড়ির দুর্গাপুকুর পুরোহিতের মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে ঘট ভরে নিয়ে আসা হয় মন্দির প্রাঙ্গনে,এদিন পাঁঠা বলিও হয়।এদিনের ঘট ভরা অনুষ্ঠানে বিশেষত গ্রামের পুরুষেরা অংশগ্রহণ করে।আজ থেকে ষষ্ঠীর আগের দিন পর্যন্ত দূর্গা মন্দির প্রাঙ্গণে সকাল সন্ধ্যা হয় চন্ডীর আরাধনা ও চণ্ডীপাঠ।আবার ষষ্ঠীর সকালে নতুন করে ঘট ভরে রীতিনীতি মেনে দুর্গার আরাধনা শুরু হয়।
জমিদার পরিবারের বংশধর জয়গোপাল চ্যাটার্জী জানান, একসময় জেলার প্রতিটি জমিদার ও বনেদি পরিবারে বোধন পুজোর মাধ্যমে সূচনা হতো দুর্গো উৎসবের।তবে সময়ের সঙ্গে বদলেছে নিয়ম কানুন।জেলার একমাত্র বোধনের মাধম্যে পুজোর সূচনা হয় লালবাথানিতে।এই পুজোয় বিশেষত চ্যাটার্জি,ব্যানার্জি,মুখার্জী ও রায় বাড়ির।লালবাথানি গ্রামের একেবারে শেষ প্রান্তে এই মন্দিরটির অবস্থান।কৃষ্ণ পক্ষের নবমী তিথির বোধন থেকে ১২ দিন ধরে মন্দির প্রাঙ্গণে চলে চন্ডি পূজো।ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত মা দুর্গার পূজার ব্যবস্থাপনায় থাকেন চ্যাটার্জি ও ব্যানার্জি পরিবার। পুরোহিতের আসনে বসেন সেই পরিবারের ছেলে দেবায়ন মুখার্জি।প্রচন্ড জাগ্রত দেবী হিসেবে লালবাথানি বড় দুর্গা পূজিত হয়ে আসছেন। কথিত আছে বড় দুর্গার কাছে মানত করলে সেই মানত পূরণ হবেই। আর মানত পূরণের আশায় ভিড় জমান হাজারো ভক্ত। শুধু হিন্দুরা না মুসলিম ধর্মাবলম্বীর মানুষজন ও মায়ের কাছে মানত করতে হাজির হন।
মন্দির প্রাঙ্গণে বসে কথা হচ্ছিল পুজোর দায়িত্বে থাকা সৌমেন্দু রায় ও অংশুমান রায়ের সাথে।তারা জানান, বড় দুর্গা প্রচন্ড জাগ্রত, মানত করলে মানত পূরণ হয় বলে হিন্দু মুসলিম সকল সম্প্রদায়ের মানুষ ভিড় জমান।৫০ টিরও বেশি পাঠাবলি হয়।জমিদার আমলে নবমীর দিন এই মন্দির প্রাঙ্গণে পাত পেড়ে খেতো সমস্ত গ্রামের মানুষ।জমিদারি না থাকলেও কিছুটা ছাটকাট হলেও সেই প্রথা এখনো অব্যাহত।নবমীর দিন মন্দির প্রাঙ্গনে মেলা বসে যার আকর্ষণ সারা বছরই আমাদের তাড়া করে।