প্রধান শিক্ষিকার মানসিক নির্যাতনের জেরে স্কুলের মধ্যেই অজ্ঞান হয়ে গেলেন এক শিক্ষিকা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে মাদার স্কুল জলপাইগুড়ি মাড়োয়ারি বালিকা বিদ্যালয়ে।
অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই প্রধান শিক্ষিকার মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছিলেন সহ-শিক্ষিকারা এদিন সহ্য করতে না পেরে এবার স্কুলের মধ্যেই অজ্ঞান হয়ে যান এক শিক্ষিকা। জানা গিয়েছে, ওই স্কুলের প্রাথমিক বিভাগে কিছুদিন আগেই সহকারী শিক্ষিকা হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন বিভা ভট্টাচার্য। ওই স্কুলেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা হিসাবে দায়িত্ব সামলান সরিতা চৌধুরী। স্কুলের অন্যান্য শিক্ষিকাদের অভিযোগ, প্রায়ই নানা অছিলায় স্কুলের শিক্ষিকাদের মানসিকভাবে নির্যাতন করেন প্রধান শিক্ষিকা সরিতাদেবী। শুক্রবার স্কুলে ক্লাস নিচ্ছিলেন বিভাদেবী। ব্ল্যাকবোর্ডের লেখা পড়ুয়াদের বোঝানোর জন্য তিনি একটি লাঠি ব্যবহার করছিলেন। পড়ুয়াদের মারধর করেন, এই অভিযোগে হঠাত্ই বেশ কিছু অভিভাবককে নিয়ে ক্লাসে ঢুকে পড়েন প্রধান শিক্ষিকা। এরপর ওই অভিভাবকরা তাঁর উপর চড়াও হন বলে অভিযোগ জানিয়েছেন বিভাদেবী। এরপরেই অসুস্থ হয়ে মূর্ছা যান বিভাদেবী। স্কুলের অন্য শিক্ষিকারা এসে তাঁকে সুস্থ করার চেষ্টা করলে তাঁদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করেন প্রধান শিক্ষিকা। অসুস্থ শিক্ষিকার চিকিত্সার কোনওরকম ব্যবস্থা না করে তিনি সেখান থেকে চলে যান বলে অভিযোগ। অন্যান্য শিক্ষিকারা অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এদিন এই ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে বিভা ভট্টাচার্য কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমরা নতুন নিয়ম অনুযায়ী অন্য সার্কেল থেকে মাদার স্কুলে আবার ফিরে এসেছি। কিন্তু এই সরিতা চৌধুরী আমাদের জয়েন করতে দিচ্ছিলেন না। তিনি সবসময় আমাকে মানসিক নির্যাতন করেন। আমরা গতকাল এই ঘটনা জেলা স্কুল পরিদর্শক অফিসে গিয়ে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।’
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান শিক্ষিকা। তাঁর দাবি, ‘ওই শিক্ষিকা বাচ্চাদের মারধর করেন। খুব বকুনি দেন। সেইজন্য বাচ্চারা স্কুলে আসতে চাইছে না। এই বিষয়ে ওঁকে কিছু বলতে গেলে উনি এরকম নাটক করেন। আজ স্কুলে মিটিং হবে বলে অভিভাবকদের ডেকে এনেছিলেন উনি। মিটিংয়ের কথা আমার জানা ছিল না। এরপর অভিভাবকেরা আমার ওপর রাগারাগি করতে থাকলে আমি তখন তাঁদের নিয়ে ক্লাসে গেলে দেখতে পাই ওঁর হাতে লাঠি। এরপর অভিভাবকদের সাথে ওঁর গন্ডগোল শুরু হয়।এবিষয়ে ‘স্কুল পরিদর্শক শ্যামল রায় জানিয়েছেন, পুরো ঘটনা জানার জন্য সার্কেল ইন্সপেক্টরকে স্কুলে পাঠানো হয়েছে। তার তদন্তের ভিত্তিতেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।