গত কয়েকদিন ধরে লাগাতার একটানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত সিকিম। ফুসছে তিস্তা। কোথাও জলের তোরে ভেসে গিয়েছে ঘর, বাড়ি, আবার কোথাও ধস নেমে তলিয়ে গিয়েছে গাড়ি। ভেঙেছে রাস্তা।
ইতিমধ্যেই ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে ধস নামায়। কালিম্পঙ হয়ে বাংলার সাথে পুরোপুরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সিকিমের। পাশাপাশি তিস্তা বাজার হয়ে দার্জিলিং যাওয়ার রাস্তাও বন্ধ। আরো একাধিক রাস্তা পাহাড় ধসের কারণে সিকিমে যাতায়াত অবস্থা বেহাল। এখনো গ্যাংটকে প্রায় দেড় হাজারেরও বেশি বাংলার পর্যটক আটকে রয়েছে। তাদের ঘুর পথে লাভা হয়ে বিকল্প রাস্তা দিয়ে সমতলে নামানোর চেষ্টা করছে সেখানকার প্রশাসন। কিন্তু আবহাওয়া খারাপ থাকায় থমকে যাচ্ছে সেই চেষ্টা। বিপর্যস্ত সিকিমকে স্বাভাবিক করতে নামানো হয়েছে ভারতীয় সেনা। আর সিকিম পাহাড়ে বৃষ্টির জেরে তিস্তা নদীর জলস্তর এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে সমতলের সৃষ্টি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি।
তিস্তার জল ঢুকতে শুরু করেছে জলপাইগুড়ি জেলার ক্রান্তি ব্লকের বেশ কয়েকটি গ্রামে।জলমগ্ন হয়ে পড়েছে বহু পরিবার। স্থানীয় প্রশাসনের সাহায্যে ইতিমধ্যে নদী বাঁধের উপরে প্লাস্টিকের অস্থায়ীভাবে তাঁবু টানিয়ে তারা আশ্রয় নিয়েছে। রাতের ঘুম উড়েছে স্থানীয়দের। এদিকে সমস্ত পরিস্থিতি মোকাবেলায় সজাগ রয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন। বিভিন্ন নদী পার্শ্ববর্তী এলাকায় মাইকিং করে সতর্ক করা হচ্ছে স্থানীয়দের। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। হেল্পলাইন নাম্বার। বন্যা কবলিত এলাকার মানুষদের ত্রান শিবিরে নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে। তিস্তা লাগোয়া বসবাসকারী কয়েকশো পরিবার বর্তমানে জলমগ্ন।
আর সেই জলমগ্ন পরিবারদের পাশে ইতিমধ্যে দাঁড়িয়েছে ক্রান্তি ব্লক প্রশাসন সহ এলাকার পঞ্চায়েত প্রধান।
এদিন সকালে ক্রান্তি ব্লকের বিশিষ্ট সমাজসেবী মোঃ নূর নবীউল ইসলাম সমস্ত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের হাতে চিড়া গুড় ডালমুড়ি শুকনো খাবার ইত্যাদি দিয়ে পাশে দাঁড়ান। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন এই বন্যার জলের ফলে কৃষি জমির ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় সমাজসেবী মোঃ নুর রবিউল ইসলাম জানান দ্রুত বাঁধ নির্মাণের কাজ যদি প্রশাসন শুরু করে তাহলে এই বন্যা থেকে কিছুটা হলেও এলাকাবাসী সুরক্ষিত থাকবে। সবমিলিয়ে সিকিম পাহাড়ে এই একটানা বৃষ্টির ফলে ফুসছে যেমন তিস্তা নদী। পাশাপাশি ফুলেঁপে উঠতে শুরু করেছে পাহাড়ি অন্যান্য নদীগুলিও। সেই জল নেমে আসছে সমতলে আর ডুয়ার্সের সমতলে জলপাইগুড়ি জেলায় বেশ কিছু অংশে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এখন কিছুটা জল নামতে শুরু করলেও রাতে আরো বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি ভয়ংকর রূপ নিতে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।