দক্ষিণ দিনাজপুরের মতোই কী পিছনের দরজা দিয়ে মালদা জেলা পরিষদ কব্জা করার গেরুয়া প্রচেষ্টা ধাক্কা খেল? অন্তত বৃহস্পতিবার তেমনই ইঙ্গিত মিলেছে। বিজেপির প্রার্থী তালিকা প্রকাশের দিনেই সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া ৩ সদস্য ফের চিঠি দিয়ে দলকে জানাল যে তাঁরা তৃণমূলে ছিলেন, তৃণমূলেই থাকছেন। আর তাঁদের সমর্থন পেয়েই মালদা জেলা পরিষদ দখলে থাকার কথা ঘোষণা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা কো-অর্ডিনেটর হেমন্ত শর্মা। যদিও তা মানতে রাজি হননি বিজেপির জেলা সভাপতি গোবিন্দচন্দ্র মণ্ডল।তিনি শাসকদলের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে পাল্টা বলেছেন,‘ক্ষমতা থাকলে জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডলের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনুক তৃণমূল কংগ্রেস।’
মূলত, গতকয়েকদিন ধরেই মালদা জেলা পরিষদের দখল নিয়ে কার্যত দড়ি টানাটানির খেলা শুরু হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে। চলতি মাসের প্রথমদিকে জেলা পরিষদের ১৪ জন সদস্যকে নিয়ে কলকাতায় গিয়ে বিজেপিতে নাম লেখান প্রাক্তন তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ তথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌড় চন্দ্র মন্ডল। আর তৃণমূলের ১৪ দলত্যাগী সদস্যকে গেরুয়া শিবিরে সামিল করার পরেই নব্য বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী সদর্পে ঘোষণা করেছিলেন, রাজ্যের প্রথম জেলা পরিষদ হিসেবে মালদা বিজেপির দখলে এল।’
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৩৮ আসন বিশিষ্ট মালদা জেলা পরিষদে ২৯টি আসন পায় তৃণমূল কংগ্রেস। ৬টিতে জয়ী হয় বিজেপি ও ২টিতে কংগ্রেস। সম্প্রতি একজন কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে ও একজন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। ফলে তৃণমূলের আসন সংখ্যা দাঁড়ায় ৩১। অন্যদিকে কংগ্রেস ও বিজেপির আসন সংখ্যা কমে দাঁড়ায় এক ও পাঁচে। কিন্তু জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌড়চন্দ্র মণ্ডলের নেতৃত্বে তৃণমূলের ১৪ সদস্য বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় পদ্ম শিবিরের শক্তি বেড়ে দাঁড়ায় ঊনিশে। পক্ষান্তরে তৃণমূলের শক্তি কমে দাঁড়ায় সতেরোতে।
কিন্তু বৃহস্পতিবার ফের নাটকীয় মোড়। যে ১৪ জন জেলা পরিষদ সদস্য বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন বলে শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছিলেন, তাদের মধ্যে সন্তোষ চৌধুরী সহ তিনজন তৃণমূল নেতৃত্বকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, তাঁরা তৃণমূলেই রয়েছেন। যার ফলে তৃণমূলের শক্তি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০। পক্ষান্তরে বিজেপির শক্তি কমে দাঁড়িয়েছে ১৬-তে। মালদা জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর হেমন্ত শর্মা এদিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিজেপির পক্ষ থেকে অসত্য ও ভিত্তিহীন দাবি করা হচ্ছে। অনেকে ফের আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। আমরা খুব শিগগিরই দেখিয়ে দেব যে মালদা জেলা পরিষদ তৃণমূলের ছিল, আছে, থাকবে।’