‘আক্রান্ত পরিবারগুলোর কথা শুনে চোখের জল ধরে রাখতে পারিনি’, কোচবিহারে গিয়ে দুঃখিত রাজ্যপাল

রাজনৈতিক ভাবে অশান্ত এলাকাগুলি পরিদর্শনের কথা বলেছিলেন। সেইমতো নিজের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে গিয়েছেনও। কিন্তু ভোট পরবর্তী বাংলায় জেলা সফরে গিয়ে একেবারেই ভাল অভিজ্ঞতা হল না রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের। শীতলকুচির জোড়পাটকিতে কালো পতাকা, গো ব্যাক স্লোগান – নজিরবিহীন বিক্ষোভের মুখে পড়লেন তিনি, আটকানো হল কনভয়। রাজনৈতিক হিংসায় প্রিয়জনকে হারানো পরিবারগুলির সঙ্গে কথা বলে বড়ই বিষণ্ণ হয়ে পড়েছেন তিনি। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তৈরি হয়েছে ক্ষোভ। এর জন্য রাজ্যপালের কাছে পুলিশ অফিসাররা ধমকও খেয়েছেন। কোচবিহার সফর সেরে ফিরে সাংবাদিক সম্মেলনে সেসব অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরার পাশাপাশি ফের রাজ্য প্রশাসনের সমালোচনা করলেন রাজ্যপাল। বললেন, পুলিশে ভরসা নেই।
বৃহস্পতিবার দিনভর অশান্ত কোচবিহারের বিভিন্ন জায়গা ঘুরেছেন রাজ্যপাল। তাঁর সাংবিধানিক অধিকারের কথা মনে করিয়ে রাজ্যবাসীর সুরক্ষা কতটা, তা সরেজমিনে দেখেছেন। কিন্তু সেই ছবিটা তাঁর কাছে খুব একটা আশাদায়ক নয়। সন্ধের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সেই ছবিটাই তুলে ধরলেন তিনি। তার আগে অবশ্য একাধিক টুইটে পরিস্থিতির সমালোচনা করেছেন। রাজ্যপালের কথায়, ”আমি শপথ গ্রহণের সময়েই বলেছিলাম, রাজ্যবাসীর সুরক্ষা, ভালমন্দ দেখার ভার আমার। আমার দায়িত্ব, জনতার সেবা করা। সংবিধানের যে শপথ নিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম, আজও সেই কাজ করছি। যাঁরা বলছেন, আমি সংবিধান মেনে কাজ করছি না, তাঁরা নিজেরাই ঠিকমতো জানেন না।” এরপর পুলিশের ভূমিকার নিন্দা করে তাঁর বক্তব্য, ”পুলিশ শাসকদলের হয়ে কাজ করছে। তাই পুলিশকে তোয়াক্কা করছে না শাসকদলের কর্মীরা। সাধারণ মানুষ কীভাবে ভরসা রাখবে?”

এদিন বিক্ষোভের মুখে পড়ায় দিনহাটার আইসিকে ডেকে ধমক দিয়েছেন ধনকড়। তাঁকে নিজের কর্তব্যের কথা মনে করিয়েছেন রাজ্যপাল। নিজের কনভয় আটকানোর দায় তিনি চাপিয়েছেন শাসকদলের কর্মীদের উপর। টুইটে সেই অভিযোগও তুলেছেন। তাঁর মতে, রাজ্যপাল জেলা সফরে গিয়ে এভাবে বিক্ষোভের মুখে পড়াটা পুলিশের বড় ব্যর্থতা। রাজ্যপালের এই সফর নিয়ে তাঁকে কটাক্ষে বিঁধতে ছাড়েনি তৃণমূল নেতৃত্ব। সৌগত রায় থেকে ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায় – সকলেরই মত, সাংবিধানিক কর্তব্য পালন নয়, রাজ্যপাল রাজনীতি করেছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here