চুরির কথা তো অনেক শুনেছেন, কখনো কি নদী চুরির কথা শুনেছেন..? হ্যাঁ ঠিক শুনেছেন..! নদী চুরি, প্রকাশ্য দিবালোকে প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে দিনের পর দিন গড়ে উঠছে একের পর এক পাকা ঘরবাড়ি। শুধু তাই নয় বালির বস্তা লোহার কাটারিং দিয়ে নদীর গতিপথ পরিবর্তন করে দেওয়া হচ্ছে, এবং তারপরই গড়ে উঠছে পাকা পিলার সমেত ইটের ইমারত।
তবে এই ঘটনা নতুন নয়, দিনের-পর-দিন নদী চুরি করে ঘরবাড়ি বানানোর এই বেনজির ঘটনা ঘটে চলেছে আশিঘর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন হাতিয়াডাঙ্গার সাহু নদী এলাকায়। যেখানে পুরো ডাবগ্রাম ২ অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকার সমস্ত জমা জল মূল জলপ্রপাত সাহু নদীতে এসে বেরিয়ে যায় সেই সরকারি জমিতে কোন কাগজপত্র ছাড়াই বিকোচ্ছে নদীর পাড়। স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ এর পিছনে রয়েছে একটি অসাধু চক্র, যারা যথেষ্ট প্রভাবশালী এবং বলশালী।
তবে দিনের পর দিন কিভাবে প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে চলছে এমন অসাধু ব্যবসা..? প্রশ্নের উত্তরে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যা জানান এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগ না পাওয়ায় তিনিও লিখিতভাবে কোন অভিযোগই জানাননি, তবে মৌখিক ভাবে তিনি সবটাই জানিয়েছেন ওপরমহলে।
বর্তমানে প্রায় বছর খানেকের বেশি সময় ধরে লকডাউন চলাকালীন, যেন এর প্রভাব আরও বেড়ে গিয়েছে..! কার্যত এই কথা স্বীকার করে নিয়েছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান শুধা সিংহ চ্যাটার্জী এবং প্রসঙ্গক্রমে তার মুখে এই চক্রের এক পান্ডা সুব্রত এর নাম উঠে আসে..! এর পাশাপাশি প্রধান সরাসরি ভূমি দপ্তর এর ওপর অভিযোগ এনেছেন..! তিনি আরও জানান এর আগেও বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি লিখলেও কোন কাজ হয়নি, এদিন পুনরায় চিঠি দেবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান..!
দিনের আলোয় প্রকাশ্যে সরকারি নদীর পাড় দখল করে একের পর এক বেআইনি নির্মাণ হলেও তা এতদিন আটকানো হয়নি কেন..? কেন ডাবগ্রাম এলাকায় জমি বিক্রির মাফিয়া চক্র সক্রিয়..? এই সমস্ত বেআইনি নির্মাণ বা ব্যবসা কারা করছে সেটা স্থানীয় মানুষজন জানলেও এই সমস্ত তথ্য প্রশাসন কেন জানতে পারছে না..? এই সকল প্রশ্ন তুলছেন সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা..! স্বভাবতই এভাবে নদী চুরি করে ইমারত গড়ে ওঠায় স্বাভাবিকতা হারাচ্ছে নদীপথ, ভারসাম্য হারাচ্ছে সমাজ, প্রকৃতি হারাচ্ছে তার নিজস্বতাকে..! তবে, কবে প্রশাসনের সজাগ দৃষ্টি ফিরবে এদিকে..? সেদিকেই এখন সকলে তাকিয়ে..!