বালুরঘাট উচ্চ বিদ্যালয়-এর মাঠের পরিবর্তে এবার আম বাজার বসল বালুরঘাট পুরসভার পার্কিংয়ে। খেলার মাঠ রক্ষার পাশাপাশি, ক্রেতা বিক্রেতাদের সুবিধা হয়েছে নয়া ব্যবস্থায়। পুর কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ সকলের।
জানা গিয়েছে, ২০০৪ সালে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তথা সদর বালুরঘাট থেকে প্রথম ট্রেন যোগাযোগ চালু হয়। এরপর থেকেই মালদা ও মুর্শিদাবাদ জেলার আম ব্যবসায়ী ও বিক্রেতারা এই মরশুমে আমের ডালা নিয়ে ছড়িয়ে পরত বালুরঘাট সহ জেলার সব প্রান্তে। প্রতিবার এইসময় বালুরঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে বসে অস্থায়ী আম বাজার। সাধারণ খোলা বাজারের তুলনায় অনেকটাই সস্তা এই আম বাজারের আম। কিন্ত এবার নিদিষ্ট ওই মাঠের পরিবর্তে জোড়া ব্রীজ সংলগ্ন পুরসভার পার্কিংয়ে বসা শুরু হল এই বাজারটি। পুরসভার নিয়মিত মাইকিংয়ে প্রথম থেকেই জমে উঠেছে এই বাজার।
আম ব্যবসায়ী প্রভাস মন্ডল ও অখিল মন্ডল বলেন, ‘আগে আমাদের এই আম বাজার বালুরঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে বসত। কিন্তু সেখানে কিছু অসুবিধা হওয়ার জন্য এই বাজার এবার জোড়া ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় বসছে। প্রায় ১০০ জন আম বিক্রেতা এবারের আম বাজারে বসেছে। তবে গতবারের তুলনায় এবারে ক্রেতার ভিড় কিছুটা হলেও কম কারণ নতুন জায়গা। অনেকে হয়তো এই আম বাজারের স্থান পরিবর্তনের কথা জানেন না। তবে আমরা আশা করছি কিছুদিনের মধ্যেই এখানে ক্রেতাদের ভিড় যথেষ্ট পরিমাণেই হবে।’
আরেক আম বিক্রেতা বিপ্লব মোহন্ত বলেন, ‘এবারে ক্রেতার ভিড় কম। তার কারণ বৃষ্টি কম হওয়ার জন্য আমের ফলন কম হয়েছে এবং সেজন্য আম বাজারে আমের দাম বেশ বেশি। ল্যাংড়া আম বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি, হিমসাগর ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি এবং গোপাল ভোগ ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারে ভিড় না হওয়ার জন্য আমরা চিন্তায় আছি।’এই আম বাজারটি পুরসভার কাছ থেকে যিনি লিজ নিয়েছেন সেই জয়ন্ত হালদার বলেন, ‘আমি পুরসভার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকায় এই জায়গাটির লিজ নিয়েছি এবার আম বাজার বসানোর জন্য। তবে যেহেতু এবারে আম বাজারে ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়ই সংখ্যায় কম সেজন্য আমার নিজের টাকা কিভাবে উঠবে সেই নিয়ে যথেষ্ট চিন্তা আছি। গতবারের তুলনায় এবারে মালদা থেকে আমের বিক্রেতা কম এসেছে। কারণ আমের দাম এবার খুব বেশি।’
আমের ক্রেতা মিতা ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমি প্রত্যেকবার আম বাজার থেকে আম কিনি কারণ এখানে আম তুলনায় সস্তা এবং অনেক ধরনের আম পাওয়া যায়। তবে এবারে আম বাজারটা যেহেতু নতুন জায়গায় এসেছে তাই আম বাজার শুরু হওয়ার বেশ কয়েকদিন পর আমি এখানে এলাম। এখানে এসে দেখছি বিক্রেতারা সংখ্যায় কম। স্থানীয় ফলের বাজারের তুলনায় এখানে আমের দাম কেজিতে কুড়ি থেকে ত্রিশ টাকা কম। আমি ল্যাংড়া এবং গোপালভোগ দুই ধরনেরই আম কিনেছি আম বাজার থেকে।’
বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক মিত্র জানান, ‘যেখানে এতদিন বাজারটি বসত সেটি একটি মাঠ। ওই মাঠে খেলাধূলো হয়। সেখানে বাজার বসার ফলে বহু মানুষের সমস্যা হয়। পাশাপাশি, নোংরা আবর্জনায় ভরে ওঠে। সেকারণে এই স্থান পরিবর্তন।’