বড়োসড়ো সাফল্য নিমতিতা বিস্ফোরণকাণ্ডে!! সিআইডি-র জালে আরো দুই

নিমতিতা বিস্ফোরণকাণ্ডের তদন্তে বড় সাফল্য গোয়েন্দাদের। গ্রেফতার করা হল আরও দুজনকে। ঝাড়খণ্ড থেকে পাকরাও করা হয়েছে শাহিদুল ইসলাম নামের এই যুবককে। ধৃত অপর যুবকের নাম আবু সামাদ তার বাড়ি মুর্শিদাবাদের সুতিতে। দু’দিন আগেই আটক করা হয়েছিল এই দুজনকে। লাগাতার জেরার পর শুক্রবার তাদের গ্রেফতার করে বহরমপুরে সিআইডি অফিসে নিয়ে আসা হয়। বিস্ফোরণের ঘটনার সূত্র পেতে তাদের জোরকদমে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে।

সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম সহিদুল ইসলাম । এদিন তড়িঘড়ি তাকে  লালবাগ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক   তাকে ১২ মার্চ পর্যন্ত সিআইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, তার বিরুদ্ধে, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৬,৩০৭,১২০ বি ইন্ডিয়ান পেনাল কোড এবং ‘এক্সপ্লোসিভ আর্মস অ্যাক্ট’ এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে শুরু হয়েছে জোর তল্লাশি। শীঘ্র আরও কয়েকজনকে সিআইডি জালে ধরা পড়তে পারে বলেই বিশেষ সূত্রের খবর।

প্রসঙ্গত চলতি মাসের ১৭ তারিখে জঙ্গীপুর মহকুমার অন্তর্গত নিমতিতা স্টেশন থেকে কলকাতায় দলীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য  প্লাটফর্মে দেহরক্ষী ও দলীয় কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে প্রবেশ করেছিলেন রাজ্যের শ্রমদপ্তর এর প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। আর সেই সময় মাত্র কয়েক ফুট দূর থেকে তাঁকে লক্ষ্য করে প্রাণে মারার উদ্দেশ্যে জোরালো শক্তিশালী বোমা ছোড়ে দুষ্কৃতীরা।  বোমা নিক্ষেপে পর চারপাশ ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। হামলার আকস্মিতা কাটিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় প্রতিমন্ত্রীকে। তাঁর সঙ্গে থাকা নিরাপত্তারক্ষী থেকে শুরু করে আরও ২৬ জন  স্প্লিন্টারের আঘাতে জখম হন। জাকির হোসেনের বুক ও মাথার বেশ কিছু অংশ সেইসঙ্গে হাঁটু ও তার নীচে একাধিক জায়গায় গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয় বোমের আঘাতে। বিকট আওয়াজ শুনে তড়িঘড়ি আশেপাশের অন্যান্য লোকজন থেকে শুরু করে রেলওয়ে পুলিশ ছুটে আসে সেখানে। ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় প্রতিমন্ত্রী ও তাঁর সমর্থকদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় জঙ্গিপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। পরে সেখান থেকে স্থানান্তরিত করা হয় এসএসকেমে।

বিশেষ সূত্র মারফত জানা যায়, শ্রম দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন এর ওপর প্রাণঘাতী আক্রমণে ব্যবহৃত হয়েছে বিশেষ ‘প্রেসার রিলিজ টেকনোলজি’ সমৃদ্ধ বোমা। যে কারণে ব্যাগটি টেনে তোলার সঙ্গে সঙ্গেই সেটি ফেটে যায়। অর্থাৎ ভারী কিছু বস্তু ছিল। যেটি নড়াচড়া হওয়াতেই বিকট শব্দ করে বিস্ফোরণ ঘটে। পাশাপাশি সিটের তদন্তে আরোও জানা যায়, ওই ভয়াবহ বিশেষ বোমার বিস্ফোরণ প্রাথমিকভাবে পার্শ্ববর্তী সূতিতে এলাকা থেকে আনা হয়েছিল বলেই গোয়েন্দাদের অনুমান। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, সূতি এলাকায় এরকম শক্তিশালী বোমা আগেও উদ্ধার হয়েছে। এই বোমাটি মোটা পাতের চাদর দিয়ে তৈরি করা হয়। যার ফলে নিমতিতা স্টেশনে বিস্ফোরণের পর তেমনই পাতের টুকরো প্ল্যাটফর্মএবং রেল লাইনে ছড়িয়ে পড়েছিল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here