রাজ্য পুলিশ নয়, এবারের নির্বাচনে প্রতিটি বুথের ভিতরে এবং বাইরে নজরদারির দায়িত্বে থাকবে শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী৷ বুথের ভিতরে এবং বুথ থেকে একশো মিটার দূরত্বের মধ্যে শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় বাহিনীকেই মোতায়েন করা হবে৷
প্রসঙ্গত,বুথের ভিতরেও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য রাজ্য পুলিশের তরফে একজনকে রাখা হয়৷ কিন্তু এবার সেই রীতিতে বদল করছে কমিশন৷ বুথের ভিতরে শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় বাহিনীকে মোতায়েন করার দাবিতে মূলত বিজেপি নেতৃত্বই সরব হয়েছিলেন৷ প্রথম দফায় মূলত জঙ্গলমহলেই ভোট হতে চলেছে৷ জঙ্গলমহলের যে এলাকাগুলি অতীতে মাওবাদী অধ্যুষিত বলে পরিচিত ছিল, সেই এলাকাগুলির সেক্টর অফিসগুলির নিরাপত্তার দায়িত্বেও থাকছে শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় বাহিনীই৷ শুধুমাত্র প্রতিটি ক্যুইক রেসপন্স টিমে এক সেকশন (৮ জন) করে কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং এক সেকশন করে রাজ্যের সশস্ত্র পুলিশ থাকবে৷নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়৷ তিনি বলেন,’এখনও বিস্তারিত জানি না৷ কমিশন যেভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করবে, সেটাই হবে৷ কিন্তু নিয়ম মতো রাজ্য সরকারের পুলিশের অধীনে থাকার কথা৷ সেটা যদি না হয় তাহলে আমরা নিরাপত্তা কমিশনের কাছে অভিযোগ করব৷ নির্বাচন কমিশন এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকলে কেন তা করেছে জানি না৷ কমিশন নিয়ম নীতির ঊর্ধ্বে নয়৷ ওরা সেরকম কিছু করলে আমরা আপত্তি জানাব৷’
স্বভাবতই কমিশনের এই সিদ্ধান্তে খুশি বিজেপি৷ কারণ বুথের নজরদারিতে শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবিতে কমিশনে দরবার করেছিলেন বিজেপি নেতারা৷ বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন,’বাংলার মানুষ এটাই চায়৷ আমরাও মানুষের এই দাবিটাই তুলে ধরেছিলাম যে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট হোক৷ মানুষের রাজ্য পুলিশের উপরে কোনও আস্থা নেই৷ কারণ এখানে পুলিশ, প্রশাসন আর দল এক হয়ে গিয়েছে৷যদিও কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে পুরোপুরি সমর্থন করেননি সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী৷ তাঁর মতে,’নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব নিশ্চিত করা যাতে মানুষ স্বাধীন ভাবে ভোট দিতে পারে৷ তার একটা অংশ বুথকে ঠিক মতো পাহারা দেওয়া৷ কিন্তু রাস্তায় বা মানুষ যেখানে থাকেন সেখানেও চোখ রাঙানি, ধমকের ঘটনা ঘটে৷ রাজ্য পুলিশ রাস্তায় ঠিক মতো পাহারা দেবে আর বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী ঠিক ভাবে পাহারা দেবে এটা কীভাবে ঠিক হল? রাজ্য পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সম্মিলিত ভাবে ব্যবহার করার উপরেই জোর দিতে হবে৷ এই ভাগাভাগির কোনও মানে নেই৷’