একদিনেই বাম থেকে রাম। দুদিন বাদেই মিলে গেল বিধানসভার টিকিট। আর দীর্ঘ 30 বছরের বেশি সময় ধরে বাম রাজনীতি করে আসা ভগবানের কাছে মাথা নিচু না করা সেই ব্যক্তি এবার পুজো দিলেন কালী মায়ের। হাতে লাল পতাকার জায়গায় কপালে লাল টিকা।হ্যাঁ, আমরা শিলিগুড়ির বিজেপির প্রার্থী শংকর ঘোষ এর কথাই বলছি।
মূলত, ছাত্ররাজনীতি থেকেই বামপন্থায় বিশ্বাস করা শংকর ঘোষ এবার শিলিগুড়ির বিজেপির প্রার্থী। এসএফআই, ডি ওয়াই এফ আই এর পর জেলা সিপিএমের কমিটির সদস্য এবং শিলিগুড়ি মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের ২৪নম্বর ওয়ার্ডের শংকর ঘোষ সিপিএম নেতৃত্বের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে কয়েকদিন আগেই দল ছেড়েছেন। দল ছাড়ার পর থেকেই শুরু হয় গুঞ্জন শংকর কি বিজেপিতে যোগদান করবে? যেমন কথা তেমন কাজ দুদিন বাদেই বিজেপিতে যোগদান করেন শংকর ঘোষ। আর বিজেপিতে যোগদান করার দুদিন বাদেই মিলে গেল টিকিট। পুরনো কর্মীদের টপকে এক নম্বরে শংকর। বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে জলঘোলা তবে বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে এখনো মুখ খুলতে শুরু করেননি বিজেপি নেতৃত্ব, শংকর কে সাথে নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন প্রচারের কাজে।
এদিন সকালে শিলিগুড়ির বিজেপি প্রার্থী শংকর ঘোষ পূজার্চনা করলেন ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের করুণাময়ী কালী মন্দিরে। মায়ের কাছে প্রার্থনা করলেন আসন্ন বিধানসভা ভোটে যাতে জয়লাভ করতে পারেন তানিয়ে। সংবাদমাধ্যমের সাথে কথা বলতে গিয়ে শংকর বাবু বলেন, উন্নয়ন করতে হবে সব দিকেই, শিলিগুড়িকে মেট্রোপলিটন টাউন এ রূপান্তর করতে হবে। নালা নর্দমার কাজ থেকে শুরু করে শহরের উন্নতি সবকিছুতেই নজর দেওয়াটাই তার লক্ষ্য। পাহাড় থেকে সমতল দু’শোর বেশি আসন টার্গেট বিজেপির।আর উত্তরবঙ্গের চল্লিশটির বেশি আসনে জয়লাভ করাটাই এখন বিজেপির কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।শিলিগুড়িতে শঙ্করবাবু তারই রাজনৈতিক গুরুদেব অশোক ভট্টাচার্যের বিপক্ষে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন। দীর্ঘ কয়েক বছর যাবৎ একসাথে লড়াই করা ২ বামপন্থী নেতার মধ্যে একজন এবার বিজেপির প্রার্থী, অপরজন সেই বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে শিলিগুড়ির ভোটের ময়দানে।
শিলিগুড়িতে জয়লাভ এবং রাজ্যে ক্ষমতায় আসবেন শংকর ঘোষের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে অশোকবাবু একটি শব্দও করতে নারাজ। সংবাদমাধ্যমের সাথে কথা বলতে গিয়ে অধিকাংশ সময় ‘ধুর’ ‘ধুর’ ‘ধুর’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। অশোকবাবু বলেছেন এই বিজেপি আদৌ ক্ষমতায় আসবে না। এবং বাম থেকে রামে-এ যাওয়া শঙ্করবাবু কেউ শিলিগুড়িতে জিততে হবে না। প্রসঙ্গত বিধানসভা ভোটের সম্মুখে দাঁড়িয়ে শিলিগুড়িতে ভোটের রাজনীতিতে চরম শিখরে পৌঁছেছে তা বলাই বাহুল্য তবে দল ত্যাগ করে বাম থেকে রামে গিয়ে আশা সফল হবে কিনা তাই এখন দেখবার।