গোটা দেশে আছড়ে পড়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। মহারাষ্ট্র, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ সহ গোটা ভারতজুড়েই তীব্র অক্সিজেনের আকাল। হাসপাতাল পথেঘাটে শ্বাসকষ্টে ভোগা মানুষের ভিড়। এই পরিস্থিতির প্রশ্ন উঠছে, গত বছর করোনার বাড়বাড়ন্তের সময় দীর্ঘ লকডাউন করা হলেও তারপর থেকে কেন আগাম কোনও প্রস্তুতি নেওয়া হল না? কেনই বা দেশজুড়ো এমন বেড, ওষুধ, অক্সিজেনের আকাল? এই পরিস্থিতিতে অক্সিজেন সরবরাহ ও ভ্যাকসিন প্রদানের জন্য কেন্দ্রকে একটি ‘জাতীয় পরিকল্পনা’ নেওয়ার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। শুধু তাই নয়, দেশের বর্তমান করোনা পরিস্থিতিকে ‘জাতীয় জরুরি অবস্থা’ বলেও মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে।
দেশের করোনা পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে, স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেছে সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার সেই মামলায় প্রধান বিচারপতি কেন্দ্রের উদ্দেশে নোটিশ জারি করে বলেন, ‘দেশের এখনকার অবস্থা জাতীয় জরুরি অবস্থার সমান। এমন এক সময়ে আমরা গোটা বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনতে একটি জাতীয় পরিকল্পনা দেখতে চাই। দেশে সবপ্রান্তে অক্সিজেন সরবরাহ, অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের সরবরাহ, দেশজুড়ে টিকাকরণের পদ্ধতি ও পরিকল্পনা-মূলত এই চারটি বিষয় নিয়ে জাতীয় পরিকল্পনা আমরা জানতে চাই। রাজ্যের সমস্যা নিয়ে পর্যালোচনার ক্ষেত্রেও নিজেদের হাতে ক্ষমতা রাখতে চাইছি আমরা।’শুধু তাই নয়, দেশের প্রধান বিচারপতি এরপর বলেন, ‘দিল্লি, বম্বে, সিকিম, মধ্যপ্রদেশ, কলকাতা ও ইলাহাবাদ হাইকোর্টে এই বিষয়ে মামলা চলছে। বর্তমানে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এটি। তাই সুপ্রিম কোর্টও দেশের এই বিপর্যয়ের সময় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে।’
প্রসঙ্গত, দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন রেকর্ড গড়ছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ইতিমধ্যেই বেসামাল দেশের অধিকাংশ রাজ্যই। প্রতিদিন আক্রান্তের নিরিখে গোটা বিশ্বে রেকর্ড গড়ছে ভারত। পাশাপাশি চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে প্রতিদিন মত্যুর সংখ্যা ছাড়াচ্ছে ২ হাজার। ইতিমধ্যেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে বিশ্ব-তালিকার দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে ভারত। দেশের দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ লক্ষ ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লক্ষ ১৫ হাজার ৭৩৫ জন। আমেরিকার পর ভারত এখন দ্বিতীয় দেশ যেখানে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লক্ষ পেরিয়েছে। বর্তমানে আমেরিকার থেকে ভারতে অনেক বেশি দ্রুত গতিতে ছড়াচ্ছে করোনা ভাইরাস৷ পরিস্থিতি ক্রমশই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে৷