মধ্যরাতে করোনা হাসপাতালে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে।মূলত, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে মুম্বইয়ের ড্রিমস মলে তৈরি অস্থায়ী সানরাইজ হাসপাতালে আগুন লাগে। নিমেষেই তা ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থানে পৌঁছয় দমকলের ২২টি ইঞ্জিন। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, গতকাল রাত ১২টা ৩০ মিনিট নাগাদ মুম্বইয়ের ভান্ডুপ এলাকার ওই হাসপাতালে আগুন লাগে। হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের মধ্যে ৭০ জনকে সুরক্ষিতভাবে উদ্ধার করা হলেও বাকিদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে জীবন্তই পুড়ে যান তাঁরা। পুলিশ জানিয়েছে, এখনও অবধি মোট ১০টি মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। আরও বাড়তে পারে মৃতের সংখ্যা।
অগ্নিকাণ্ডের খবর পেতেই শোক প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “হাসপাতালে আটকে পড়া রোগীদের উদ্ধারে দারুণ কাজ করেছে দমকলকর্মীরা। তবে ভেন্টিলেটরে থাকা কয়েকজন রোগীকে উদ্ধার করা যায়নি। আমি তাঁদের পরিবারের কাছ থেকে ক্ষমা চাইছি।”উদ্ধার করে আনা হচ্ছে রোগীদের। এবিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, গতবছর করোনা সংক্রমণে রাজ্যে যখন রোগী উপচে পড়ছিল, তখন নানা জায়গায় অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছিল। একইভাবে মলের চারতলায় এই হাসপাতালটি তৈরি করা হয়ছিল। গত মাস থেকে ফের সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতেই এই অস্থায়ী হাসপাতালেও ভর্তি করানো হচ্ছিল রোগীদের। মার্চ মাসের ৩১ তারিখই এই হাসপাতালের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হত।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, সরাসরি হাসপাতাল নয়, বরং শপিংমলের ভিতরে থাকা একটি দোকান থেকেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনায় যাঁরা দায়ী, তাঁদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে বলেই জানান মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। একইসঙ্গে মৃতদের পরিবার পিছু পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আগুন লাগার পর প্রাথমিক বিবৃতিতে হাসপাতালের তরফে রোগীমৃত্যুর ঘটনা অস্বীকার করা হয়েছিল।বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, “আগুনের কারণে কোনও রোগীর মৃত্যু হয়নি।” তবে কিছুক্ষণ বাদেই জানানো হয়, কয়েকজন রোগী “নিখোঁজ”, তাঁদের খোঁজা হচ্ছে।
এদিন সকালেই মুম্বইয়ের মেয়র কিশোরী পেডনেকর বলেন, “এই প্রথম আমি কোনও শপিং মলের ভিতরে হাসপাতাল দেখলাম। শোচনীয় অবস্থা। সাত জন রোগী ভেন্টিলেটরে ছিলেন। ৭০ জন রোগীকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হলেও বাকিদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে গোটা ঘটনার একটি তদন্ত করা হবে।”
অন্যদিকে, আজই বাংলাদেশ সফরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মুম্বইয়ের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা জানতে পেরে তিনিও টুইট করে শোক প্রকাশ করেন। তিনি টুইটে লেখেন, “মুম্বইয়ের হাসপাতালে আগুন লাগার ঘটনায় মৃত্যুর সংবাদে মর্মাহত। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।”